দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সেনাবাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করছে : প্রধানমন্ত্রী

র্যোগ-দুর্বিপাকে সবক্ষেত্রেই সেনাবাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ৮৩তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য, ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা যেহেতু ২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আজকের নবীন অফিসাররাই হবে ২০৪১-এর সৈনিক, যারা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ সালের পর দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। তখন সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ নয়। জাতির পিতাই বলেছেন—সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা তা মেনে চলছি। সেভাবে আমরা আমাদের দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করে আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী ২০২১ সাল পালন করেছি। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার সময়েই আমাদের এই সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব নেন। তখন তার একটাই লক্ষ্য ছিল যে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনী।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৯৭৫-এর পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হারিয়ে যেতে বসেছিল বা বিকৃতি হয়েছিল। আমরা সরকার গঠন করার পর তা পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং আদর্শে যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গড়ে ওঠে সেই পদক্ষেপ নেই। সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই।    ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে যখন জাতির পিতা গড়ে তুলছেন, তখন রিজার্ভ ছিল না এক টাকাও। তার সঙ্গে কারেন্সি নোটও ছিল না। তখনও সেনাবাহিনীর জন্য তিনি ট্যাংক কিনে আনেন এবং অন্যান্য সমরাস্ত্র ক্রয় করে অনেক শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা সেনাবাহিনীকে আরও যুগোপযোগী করার জন্য আমি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) প্রতিষ্ঠা করে দিই। সেনাবাহিনীতে ২০০০ সালে প্রথম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার যখন সরকার গঠন করি, তখনই আমরা জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে যে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করে দিয়েছিলেন, তারই ভিত্তিতে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার (বিপিসি) প্রতিষ্ঠা করি। একইসঙ্গে ২০১৮ সালে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করি।’

এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *